আপনি যদি অনলাইন ভিত্তিক কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই নিজের একটা ওয়েবসাইট দরকার। আর এই ওয়েবসাইট মূলত তৈরি হয় ডোমেইন এবং হোস্টিং এর সমন্বয়ে। আপনি যদি ডোমেইন হোস্টিং সম্পর্কে না জেনে থাকেন বা কোথা থেকে ডোমেইন হোস্টিং কিনলে ভালো হবে, ডোমেইন হোস্টিং কেনার আগে কি কি দেখে নেওয়া দরকার ইত্যাদি বিষয়ে জানতে আগ্রহী থাকেন তাহলে এই আর্টিকেল আপনার জন্য।

এই আর্টিকেল এ আমি ডোমেইন হোস্টিং এর সকল খুটিনাটি বিষয় নিয়ে আলচোনা করবো এবং আশা করছি ইনশাআল্লাহ্‌ সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ার পর আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর আপনি পেয়ে যাবেন।

ডোমেইন কি ?

what-is-domain
what-is-domain

ওয়েবসাইট তৈরি করতে আমাদের সর্ব প্রথম যেটা দরকার পড়ে সেটা হচ্ছে আমাদের ওয়েবসাইটের নাম, আর এই নামটাকেই বলা হয় ডোমেইন। যেমন ধরুন “facebook.com” এবং এখানে “ফেসবুক” হচ্ছে ডোমেইনের নাম এবং “ডট কম” হচ্ছে টিএলডি (TLD – Top Level Domain)। এই নাম এবং টিএলডি মিলেই হয় একটি ডোমেইন অ্যাড্রেস।

ডোমেইন সবসময় ইউনিক হয়, আপনি যদি কোন ডোমেইন এর নাম সিলেক্ট করেন এবং রেজিস্ট্রেশন করেন, তাহলে ওই নাম বিশ্বের কেউই আর নিতে পারবে না যত দিন আপনি সেটা রিনিউ করে রাখবেন। এই ডোমেইন অ্যাড্রেস মূলত আপনার ব্লগ, ওয়েবসাইট বা ব্রান্ডকে রিপ্রেজেন্ট করে।

এখন প্রশ্ন আসে, ভাই আমি তো অনেক ধরনের ডোমেইন দেখেছি যেমন (.com, .net, .info ইত্যাদি)। এগুলো কি কাজে লাগে?

হ্যাঁ, এগুলোকে মূলত টিএলডি বলা হয়, অনেক অনেক টিএলডি আছে এবং এগুলো ওয়েবসাইটের ধরন বুঝতে অনেক সময় সাহায্য করে। যেমন বিশ্বের সব থেকে জনপ্রিয় টিএলডি হচ্ছে (.com)। এই টিএলডি মূলত কমার্শিয়াল কাজে ব্যবহার হয়।

আবার যেমন (.org) টিএলডি আছে, এটা কোন অর্গানাইজেশন এর জন্য হতে পারে, এবং খুব সহজেই আমরা সেটা টিএলডি দেখেই বুঝে নিতে পারি।

হোস্টিং কি ?

what-is-web-hosting
what-is-web-hosting

প্রথম উদাহরণে চলে আসি (facebook.com). আমরা জেনেছি যে ডোমেইন হচ্ছে শুধুমাত্র একটি নাম। শুধু এই নাম দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় না, আপনার এই নামটা কোন একটা সার্ভার কম্পিউটারের সাথে কানেক্ট করতে হবে, তা না হলে এই নাম দিয়ে কোন কাজ হবেনা।

হ্যাঁ, আমাদের এই ডোমেইন এর নামটা যেই সার্ভার এর সাথে কানেক্ট করতে হবে সেই সার্ভারকে আমরা বলি হোস্টিং সার্ভার।

হোস্টিং সার্ভার মূলত আমাদের কম্পিউটার এর মতই একটি কম্পিউটার, যেখানে ২৪ ঘণ্টা ইন্টারনেট কানেকশন থাকে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে। আমাদের ডোমেইন যেই কম্পিউটার এর সাথে কানেক্ট করা হবে সেটা যাতে কখনো বন্ধ না হয়, এজন্যই আমরা বিভিন্ন কোম্পানি থেকে এই ধরনের হোস্টিং সার্ভার কিনে থাকি।

এর কারণ হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইট ২৪ ঘণ্টাই যেন লাইভ থাকে এবং যে কেউ এসে যাতে আপনার ওয়েবসাইট দেখতে পারে।

ডোমেইন হোস্টিং কিভাবে কাজ করে?

আশা করি এখন আপনি জানেন ডোমেইন হোস্টিং কি, কিন্তু এটা কি জানেন ডোমেইন হোস্টিং কিভাবে কাজ করে? জি, যখন আমরা ডোমেইন হোস্টিং কিনবো, তখন আমাদের প্রথম কাজ হয় এই ডোমেইন টি কে হোস্টিং এর সাথে কানেক্ট করা। আর এই কানেকশন টা আমরা মূলত নেমসার্ভার (Nameserver) বা ডিএনএস (DNS) এর মাধ্যমে করতে হয়।

কিভাবে নেমসার্ভার সেটআপ করতে হয় এখান থেকে দেখে নিতে পারেন।

যখন আমাদের ডোমেইন, হোস্টিং সার্ভার এর সাথে কানেক্ট হয়ে যাবে, তখন আমাদের ওয়েবসাইট দৃশ্যমান হবে। তবে সেখানে কিছু দেখা যাবে না, শুধু একটা ফাকা সাদা রং এর পেজ দেখাবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, অন্য সব ওয়েবসাইট ওপেন করলে আমরা কত সুন্দর সাইট দেখি কিন্তু আমাদের সাইট ওপেন করলে কিছুই আসছে না কেন? হ্যাঁ, এর কারণ হচ্ছে – আমরা শুধুমাত্র আমাদের ওয়েবসাইট এর বেসিক সেটআপ টা করেছি, এখনো আমাদের ওয়েবসাইট এর ডিজাইন করিনি।

এখন একটু টেকনিক্যাল পার্ট এ আসি – আমরা যখন ডোমেইন অ্যাড্রেস কোন ওয়েব ব্রাউজারে ওপেন করি, তখন আমাদের ডোমেইন সার্ভারকে হিট করে। এবং সার্ভারে যদি কোন ফাইল থাকে , তাহলে সেটাই আমাদের ব্রাউজারে দৃশ্যমান হয়।

আমরা যদি আমাদের সাইটে ডিজাইন দেখতে চাই তাহলে আমাদের সব ডিজাইন ফাইল সার্ভারে রাখতে হবে এবং যখনি কেউ আমাদের সাইট ওপেন করবে, আমাদের ডিজাইন করা বিষয়গুলই ভিজিটর দেখতে পারবে। একটু জটিল মনে হতে পারে প্রসেসটি তবে এত জটিল না। যদি আমাদের কোডিং নলেজ না থাকে তাহলে খুব সহজেই আমরা WordPress CMS (ওয়ার্ডপ্রেস) ব্যবহার করে সেটা তৈরি করে নিতে পারি।

এখানে আপনি পাবেন কিভাবে আমরা আমাদের ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারি।

ওয়েব হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি?

আমরা হোস্টিং সার্ভার এর বিষয়ে জেনেছি, কিন্তু এই হোস্টিং মূলত বেশ কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। এখন আমি আপনাকে হোস্টিং এর প্রকারভেদ সম্পর্কে বলবো এবং আশা করি এখান থেকে আপনি আপনার পছন্দের হোস্টিং প্যাকেজ বেছে নিতে পারবেন।

ওয়েব হোস্টিং মূলত ২ ধরনেরঃ

  1. ফ্রি হোস্টিং
  2. প্রিমিয়াম হোস্টিং

ফ্রি হোস্টিং

অনেক কোম্পানি আছে যারা কিনা পরীক্ষামূলক কাজের জন্য ফ্রি ডোমাইন হোস্টিং সার্ভিস দিয়ে থাকে। যেটা ব্যবহার করতে আপনার কোন টাকা খরচ করতে হবেনা, শুধুমাত্র ১টা ইমেইল অ্যাড্রেস হলেই আপনি সেই সাইটগুলতে জয়েন করে নিজের ওয়াবসাইট তৈরি করে নিতে পারেন।

এই ধরনের হোস্টিং এ আপনি অনেক ধরনের সমস্যা পাবেন, যেমন সাইট স্পিড, সিকিউরিটি, ব্যান্ডউইথ, ইমেইল একাউন্ট ইত্যাদি সেবা গুলো লিমিটেড থাকবে। এখানে আপনি যা চাইবেন তাই করতে পারবেন না। এবং যে কোন সময় কোম্পানি যদি চায় তাহলে আপনার একাউন্ট সাসপেন্ড করতে পারে।

যদি প্রফেশনালি ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে আমি অবশ্যই রিকেমেন্ড করবো ফ্রি ডোমেইন হোস্টিং সার্ভিস ব্যবহার থেকে বিরিত থাকুন।

প্রিমিয়াম হোস্টিং

এই ধরনের হোস্টিং আপনাকে টাকা দিয়ে কিনতে হবে। এই হোস্টিং গুলো আপনি মাসিক বা বছর চুক্তিতে কিনতে পারেন। এই হোস্টিংগুলতে আপনার সরোচ্চ এক্সিস থাকবে, আপনি যা চান তাই করতে পারেবেন। প্রিমিয়াম হোস্টিং আবার কয়েক প্রকারের আছে। যেমনঃ

  • শেয়ারড হোস্টিং (Shared Hosting)
  • ভিপিএস হোস্টিং (VPS = Virtual Private Server, Hosting)
  • ডেডিকেটেড হোস্টিং/ সার্ভার (Dedicated Hosting/Server)
  • রিসেলার হোস্টিং (Reseller Hosting)

শেয়ারড হোস্টিং

আমাদের পিসি বা কম্পিউটারে হার্ড ডিস্ক থাকে সেটা সবাই জানেন। শেয়ারড হোস্টিং সার্ভারেও হার্ডডিস্ক থাকে এবং এই হার্ডডিস্ক – কে ভাগ করে দেওয়া হয়। ধরুন একটা সার্ভারের মোট হার্ডডিস্ক আছে ১০০ জিবি। এখন আপনি সেখান থেকে ১০জিবি হার্ডডিস্ক নিলেন এবং বাকি হার্ডডিস্ক অন্য কাস্টমাররা ব্যবহার করবে।

এখানে আপনি এবং আপনার মত আরো অনেক কাস্টমার আছেন যারা কিনা ১টা সার্ভার কম্পিউটার শেয়ার করে ব্যবহার করেন। এবং এই সার্ভারকে মূলত শেয়ারড সার্ভার বলা হয়।

ভিপিএস হোস্টিং

ভিপিএস হোস্টিং এর সম্পূর্ণ ফর্ম হচ্ছে ভারচ্যুয়াল প্রাইভেট সার্ভার (Virtual Private Server)। সার্ভার কোম্পানিগুলো কোন একটি বিশেষ সফটওয়্যার এর মাধ্যমে একটা সার্ভার কম্পিউটারকে ভাগ করে আলাদা আলাদা কম্পিউটার তৈরি করে।

ভিপিএস শেয়ার হোস্টিং থেকে আলাদা, কারণ এখানে আপনার জন্য ডেডিকেটেড আইপি থাকবে এবং প্রতিটি কম্পিউটারের আলাদা আলাদা র‍্যাম, হার্ডডিস্ক ইত্যাদি থাকে। এখানে আপনি সম্পূর্ণ একটি সার্ভার কম্পিউটার পাচ্ছেন এবং এখানে অন্য কেউ শেয়ার করে এটা ব্যবহার করছে না। এজন্য আপনার সার্ভার এবং ওয়েবসাইট শেয়ারড হোস্টিং থেকে বেশি দ্রুত কাজ করবে এবং নিরাপদ থাকবে।

ডেডিকেটেড হোস্টিং

ডেডিকেটেড হোস্টিং হচ্ছে সম্পূর্ণ একটি কম্পিউটার যেটা আপনার বাসার কম্পিউটারের মত। এটা অনেক ব্যায়বহুল এবং আপনার সাইট যদি অনেক বড় হয় তাহলে আপনি এই সার্ভার নিতে পারেন। এই সার্ভার সম্পূর্ণ আপনার নিজের আয়ত্তে থাকবে এবং আপনার যদি কোন সফটওয়্যার বা টুলস সার্ভারে সেটআপ করার দরকার পরে তাহলে সেটাও আপনি করতে পারবেন।

এই সার্ভারগুল বিশেষ করে বড় বড় সফটওয়্যার ইন্সটল এর জন্য ব্যবহার করা হয়। ডেডিকেটেড সার্ভার আবার ২ ধরনের হয়ে থাকেঃ

  1. ম্যানেজড হোস্টিং
  2. আনম্যানেজড হোস্টিং

রিসেলার হোস্টিং

এটা শেয়ারড হোস্টিং এর মতই একটি হোস্টিং সার্ভিস, তবে এই সার্ভারে আলাদা ১টা সফটওয়্যার ইন্সটল করা থাকে যার নাম হচ্ছে WHM (Web Host Manager). এই হোস্টিং গুলো আমি আপনি কিনে সেটা আবার রিসেল করতে পারবো এবং এই WHM প্যানেল এর মাধ্যমে খুব সহজেই আমরা হোস্টিং ম্যানেজমেন্ট করতে পারবো।

ধরুন, আমি কোন সার্ভার কোম্পানি থেকে ৫০ জিবি হোস্টিং স্পেস কিনলাম। এখন আমার কাছে কেউ হোস্টিং চাইলো, আমি এই ৫০ জিবি হোস্টিং স্পেসকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বিক্রি করতে পারবো। যেমন আমি যদি ২ জিবি করে হোস্টিং বিক্রি করি তাহলে মোট ২৫ জনের কাছে আমি বিক্রি করতে পারবো এবং অবশ্যই আমি রিসেল করে এখান থেকে ভালো একটি টাকা উপার্জন করতে পারবো।

এই সার্ভারগুলো মূলত যারা হোস্টিং রিসেলার বিজনেজ করে তাদের জন্য তৈরি করা।

ডোমেইন হোস্টিং এর দাম

এটা আসলে অন্য সব প্রোডাক্ট এর মত ফিক্সড কোন প্রাইস নেই, আমি বোঝাতে চাচ্ছি একেক কোম্পানি একেক ধরনের দামের তালিকা তৈরি করে থাকে। তবে আমার দেখা মতে (.com) ডোমেইন এর দাম অ্যাভারেজ ১০ ডলার থেকে ১২ ডলার হয়ে থাকে প্রতি ১ বছরের জন্য। আর হোস্টিং এর দাম ২-৫ ডলার আসে প্রতি মাসে।

আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট শুরু করতে চান তাহলে আনুমানিক প্রতি বছর ৩০০০-৪০০০ টাকা খরচ হবে। তবে সার্ভার এর মান অনুযায়ী এটা বাড়তে বা কমতে পারে।

ডোমেইন হোস্টিং কেনার পূর্বে বিবেচ্য বিষয়সমূহ

একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, দাম কম দেখে হুট করে কোন কোম্পানি থেকে ডোমেইন হোস্টিং কিনবেন না, কারণ আপনি যেই ওয়েবসাইট তৈরি করছেন সেটা হতে পারে আপনার গুরুত্বপূর্ণ কোন কাজের জন্য। এজন্য নিজের ডেটা সিকুউরিটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য কিছু বিষয়ে আপনার আগে জেনে নেওয়া দরকার।

ডোমেইন কেনার আগে দেখুন

১। আপনি যেই কোম্পানি থেকে ডোমেইন কিনতে চাচ্ছেন তারা কি আপনাকে ডোমেইনের ফুল কন্ট্রোল প্যানেল দিচ্ছে কিনা।

২। যে কোন প্রয়জনে যদি কখনও আমাদের  ডোমেইন ট্রান্সফার করতে হয়, সেক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই সরাসরি ট্রান্সফার করতে পারবো কিনা। নাকি তাদের কাছে আসতে হবে। যদি নিজেরাই সরাসরি ট্রান্সফার করতে না পারি তাহলে ডোমেইন কেনার ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

৩। ডোমেইন ট্রান্সফার করে অন্য কোন কোম্পানিতে যদি নিতে চাই তাহলে তাদের কোন চার্জ দিতে হবে কিনা। এক্ষেত্রে মূলত কোন চার্জ দিতে হয়না। যদি কোম্পানি বলে চার্জ দিতে হবে তাহলে সেখান থেকে ডোমেইন না নেওয়াই ভালো।

৪। ডোমেইন লক অপশন রয়েছে কিনা তা জেনে নিন।

৫। ডোমেইন ট্রান্সফার অথেনটিকেশন কোড সরাসরি আপনি কন্ট্রোল প্যানেল থেকে নিতে পারবেন কিনা তা জেনে নিন। যদি কোড তাদের কাছে থাকে তাহলে ওই কোম্পানি থেকে ডোমেইন না নেওয়াই ভালো হবে।

৬। ডোমেইন রেজিস্ট্রেশনের সময় অবশ্যই সতর্ক থাকুন ডোমেইনে ব্যবহৃত সকল তথ্য আপনার কিনা।

৭। বিভিন্ন চটকদার অফারে বিভ্রান্ত না হয়ে ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে তারপর ডোমেইন নিবন্ধন করুন।

হোস্টিং কেনার আগে দেখুন

১। কম দামের হোস্টিং এড়িয়ে চলুন: বাংলায় একটা প্রবাদ আছে- “যত গুড় তত মিষ্টি” সুতরাং কম দামের হোস্টিং এ সাপোর্ট কম পাবেন, বেশি দামেরটায় বেশি সাপোর্ট পাবেন এটাই স্বাভাবিক। কিছুটাকা বাঁচানোর জন্য এমন মানের হোস্টিং নেওয়া উচিত হবে না যেটা আপনাকে সারা বছর ভুগাবে। ফেসবুকের কল্যানে এখন অনেকেরই স্ট্যাটাস পাওয়া যায় ১০ জিবি হোস্টিং মাত্র ৫০০ টাকায়! দয়া করে এদের এড়িয়ে যাবেন।

২। কাস্টমার সাপোর্ট: হোস্টিং কেনার আগে সাপোর্টে ফোন, মেইল বা লাইভে চ্যেট করে দেখুন তারা লাইভ সাপোর্ট কেমন দেয়। আপনার সার্ভার যদি কখনো ডাউন হয় আর যদি তা জানাতে এবং উত্তর পেতে কয়েক দিন লেগে যায় তাহলে লক্ষ ভিজিটর হারাতে পারেন। আর যদি আপনি রিসেলার ক্লাইন্ট হোন তবে তো মহা বিপদে পড়বেন। আপনার ক্লাইন্টকে কোন উত্তর দেয়ার মতো কিছু থাকবে না। তাই তাদের সাথে আপনার যোগাযোগের বেপারটা দেখ নিন।

৩। স্পেস ও বেন্ডউইথ দেখে নিন: যার কাছ থেকে হোস্টিং নিচ্ছেন তার তাছ থেকে ভাল ভাবে আপনার সার্ভারের স্পেস ও ব্যান্ডউইথ বুঝে নিন। সি-পেনেলে ঢুকে চেক করে দেখুন আসলেই কি আপনাকে আপনার কথামতন স্পেস ও ব্যান্ডউইথ দিয়েছে কিনা।

৪। বাধ্যবাধকতা : হোস্টিং প্লানগুলোর মধ্যে কোন লিমিটেশন থাকলে সেটা অনেক সময় ভালভাবে উল্লেখ করা থাকে না। তাই প্লানগুলোর তুলনা করে আপনার চাহিদার সাথে বেপারগুলো মিলে কিনা তা দেখে নিন। আপনি যদি এএসপি ডট নেটে সাইট বানাতে চান আর যদি লিনাক্স হোস্টিং বানাতে চান তাহলে তো চলবে না। এ জন্য প্রয়োজন হবে উইনডোজ প্লান। তাই জেনে নিন কি কি লিমিটেশন থাকবে আপনার সার্ভারে।

৫। প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক অবস্থা : আপনার ওয়েবসাইট যে প্রতিষ্ঠানের সার্ভারে রাখবেন তার ব্যবসা সম্পর্কে জেনে নিন। আনলাইনে সার্চ দিলে কোন হোস্টিং কোম্পানী সম্পর্কে অনেক তথ্যই বেরিয়ে আসবে। বিভিন্ন ফোরাম পোস্টগুলো দেখতে পারেন। একটি বড় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে হোস্টিং কেনাটাই বেশি ভাল।

৬। ই-মেইল ফিচার ও ডোমেইন ফিচার : আপনি কতটা ই-মেইল সেটআপ করতে পারবেন এবং কতটা ডোমেইন/সাব-ডোমেইন ব্যবহার করতে পারবেন তা অবশ্যই জেনে নিবেন। আপনার আজ হয়তো একটি ওয়েব সাইট দরকার হলো কাল আরেকটা লাগতেই পারে তাই যে সব প্ল্যান একটি মাত্র ডোমেইন হোস্ট করতে দেয় সেই প্ল্যান না কেনাই ভাল।

৭। কন্ট্রোল প্যানেল : আপনি যদি এফটিপি সফ্টওয়্যার ব্যবহার করতে অভ্যস্ত না হোন তবে সি প্যানেল বা ইউজার ইন্টারফেস কি দিবে তা জেনে নিন। আপনি হোস্টিং রিসেল করতে চাইলে একাধির ইউজার বানানো এবং তাদের জন্য রিসোর্স (স্পেস,ব্যান্ডউইথ) বরাদ্দের বেপারটি জেনে নিন।

৮। আপগ্রেড : একটা সময় আপনার বর্তমান প্লানটাকে একটু বাড়িয়ে নিতে হতে পারে, সেই সময় যদি সয়ংক্রিয়ভাবে তারা আপনার হোস্টিং আপগ্রেড করে দিতে পারে সেটা আপনার জন্য অনেক সুবিধাজনক হবে। সাধারনত ভাল মানের সকল সারভার কোম্পানী এরকম পদ্ধতি রেখে থাকে।

ডোমেইন হোস্টিং কেনার নিয়ম

অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করেন ভাই কিভাবে ডোমেইন হোস্টিং কিনতে পারবো। আপনার যদি ক্রেডিট কার্ড থাকে তাহলে আপনি বিশ্বের যে কোন ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানি থেকে আপনার পছন্দ মত সার্ভিস নিয়ে নিতে পারেন। আর যদি ক্রেডিট কার্ড না থাকে তাহলে বাংলাদেশ এ অনেক কোম্পানি আছে তাদের যে কোন কোম্পানি থেকে কিনতে পারেন।

ডোমেইন হোস্টিং কেনার আগে কোন বিষয়গুলো দেখে নিতে হবে সেটা আমি অলরেডি আপনাকে বলেছি। এবং আশা করি আপনি খুব সহজেই ভালো সেবা খুঁজে নিতে পারবেন।

ডোমেইন কিনতে চাইলে আপনি GoDaddy বা Namecheap সাইটটি ওপেন করুন এবং আপনার পছন্দ করা নামটি দিয়ে সার্চ করে দেখুন সেটা অ্যাভেলঅ্যাবেল আছে কিনা। যদি অ্যাভেলঅ্যাবেল থাকে তাহলে আপনি সেটা কিনতে পারবেন।

Add to Cart বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী দিক নির্দেশনা ফলো করে ফাইনাল চেকআউট পেজ থেকে পেমেন্ট কনফার্ম করলেই আপনার ডোমেইন কেনা হয়ে যাবে।

আপনার সুবিধার জন্য আমার কমপ্লিট অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স এর ভিডিও গুলো থেকে ১ টি ভিডিও শেয়ার করছি, নিচের ভিডিওটি দেখুন আশা করি বুঝতে পারবেন।

[su_youtube url=”https://www.youtube.com/watch?v=9dIPhWdlwcY” width=”800″ height=”420″]

(এই ভিডিওটি আমার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স এর ১টি ভিডিও)

কোথা থেকে ডোমেইন হোস্টিং কিনবো

আমি আগেও বলেছি, দাম কম দেখে হুট করে কোন কোম্পানি থেকে ডোমেইন হোস্টিং কিনবেন না, কারণ আপনি যেই ওয়েবসাইট তৈরি করছেন সেটা হতে পারে আপনার গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য। তবে আপনি যদি অনলাইন বিজনেস, ফ্রিলান্সিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদি কাজের জন্য ডোমেইন হোস্টিং কিনতে চান তাহলে অবশ্যই বিশ্বের নাম করা কোম্পানি গুলোর কোন কোম্পানি থেকে সার্ভিস নিন।

ব্যাক্তিগত ভাবে আমি রিকেন্ড করবোঃ

এই কোম্পানি গুলোর যে কোন কোম্পানি থেকে আপনি ডোমেইন হোস্টিং কিনতে নিতে পারেন। তবে অবশ্যই এই কোম্পানি গুলো থেকে ডোমেইন হোস্টিং কিনতে চাইলে আপনার অবশ্যই পেপাল বা ক্রেডিট কার্ড থাকতে হবে।

আপনার যদি Payonner Card থাকে তাহলে সেটা দিয়েও কিনতে পারবেন।

আর যদি ক্রেডিট কার্ড না থাকে তাহলে লাজুক কর্পো. লিমিটেড এ যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা আমাদের ব্লগ রিডার, ইনসাইড মেম্বার্স এবং স্টুডেন্টদের জন্য ডোমেইন হোস্টিং কেনার ক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকি।

FAQ

ডোমেইন কিভাবে রিনিউ করতে হয়?

এটা খুব ই সহজ বিষয়, আপনার যদি ক্রেডিট কার্ড ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানি এর সাথে কানেক্ট করা থাকে, আর আপনার ডোমেইন হোস্টিং অটো রিনিউয়াল অপশন অ্যাক্টিভ করা থাকে, তাহলে আপনার কিছু করতে হবে না। রিনিউ এর সময় হলে কোম্পানি আপনার একাউন্ট থেকে ডলার চার্জ করে আপনার ডোমেইন হোস্টিং অটো রিনিউ করে দেবে।

আর আপনি যদি ম্যানুয়াল রিনিউ করতে চান, তাহলে ডোমেইন এর হোস্টিং প্যানেলই দেখবেন রিনিউ করার অপশন আছে, সেখানে ক্লিক করে পেমেন্ট কনফার্ম করলেই রিনিউ হয়ে যাবে।

কত দিন পর পর ডোমেইন রিনিউ করতে হয়?

আপনি যখন কোন ডোমেইন কিনবেন সেটা নুন্যতম ১ বছরের জন্য কিনতে হয় এবং ১ বছর পর এটার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ১ বছর শেষ হবার পর ডোমেইনটি আপনাকে আবার রিনিউ করে নিতে হবে।

যখন আপনি ডোমেইন কিনবেন, তখন যদি ১ বছরের বেশি সময়ের জন্য কিনতে চান, সেটা কিনতে পারবেন। তবে আপনি সর্বোচ্চ ১০ বছরের জন্য একবারে ডোমেইনটি কিনতে পারবেন এবং পরবর্তীতে আবার রিনিউ করে নিতে পারেবন।

বিদ্রঃ আমার এই আর্টিকেল যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করুন এবং করমেন্ট করে আপনার মতামত জানান। ধন্যবাদ।

আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে এই কোর্স দেখতে পারেন, এখানে ২০০+ স্টেপ বাই স্টেপ ভিডিও গাইড পাবেন।

2 Comments

Write A Comment